বুধবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৭

বিধ্বস্ত প্রেম

রেখার মিলনে ত্রিভুজের জন্ম!
আর ত্রিভুজ ভাঙলেই রেখার মিলন সমাপ্ত!
নিয়তির কি এক প্রহসন?
দুটি মনের মিলনেই প্রেম,
যখন সমীকরণে অমিল তখনই বিধ্বস্ত প্রেম মন্দির!
দূরত্ব ঘুঁচানোর এক জটিল সরলীকরণ
ভাঙ্গাচুরার নীরব কারিগর।
এরপরও অমিল ফলাফল নোনা বৃষ্টি!

অবহেলা আর তাচ্ছিল্যের স্তূপ যখন পাহাড় সম,
তন্দ্রাচ্ছন্ন দুঃখগুলোর চাবুক হাতে করে প্রত্যাবর্তন!
আঘাতে আঘাতে জর্জরিত হৃদয়ের অলিগলি,
নিদারুণ কষ্ট!
ব্যথাতুর কাতর আজ হেঁটে যাবার চেনা পথটা,
যখন দেখে স্থির নয়ন;
বুকের উপর দিয়ে ভালোবাসার মানুষটির সুখ যাত্রা!

জীবন্ত লাশে যতই লাগাও আতর লোবান সুগন্ধ পাওয়া যায় না।
বদলে হৃদয়ের পঁচা গন্ধে করুণা জাগবে মনে!
তবু অশ্রু ঝরায় না ব্যথাতুর মন!
কিছুদিন আগেও যে শরীরে ছিল চন্দনের ফোঁটা,
নিত্য তাজা ফুলে যা ছিল পূজনীয় তা এখন অস্পৃশ্য
প্রতিটি বাঁক, উপত্যকা, ঢালু এখন ডুবো চর!
যেন চোরাবালির জীবন্ত মৃত্যুকুপ।

নড়বড়ে  ভাঙ্গা সাঁকো পেড়িয়ে এক হাঁটু নোনা জল
পানকৌড়ির নির্লিপ্ত  ডুব সাঁতার!
ভাসে অঞ্জলি ভাসমান অসংখ্য বায়ু কুঠুরী!
এটা নয় কোন শ্রদ্ধাঞ্জলি!
প্রয়োজন শেষে বরণ মালাটার স্থান আবর্জনার স্তূপে,
যদিও সেটা কারো গলায় বেঁধে ছিলো মিলনবন্ধন।

লাশকাটা ঘরে আর কতদিন?
তীব্রঘাতে বেরিয়ে আসে স্মৃতি-সুখ
তুলে নেয় দুঃখের বীণ।
কাঁদায় চোখ, কাঁদায় অতীত, ঝরায় নোনাজল ,
জমাট কষ্ট বাতাসে ভেসে বেড়াই কালো মেঘ হয়ে;
অতঃপর ঘুমন্ত দুঃখগুলোকে জাগিয়ে অন্য পথে বাড়ায় পা।

পাহাড়ের বুকে জমিয়ে রাখা দুঃখগুলো ঝর্ণা হয়ে ঝরে,
যেটা দৃশ্যমান সকলের কাছে,
এখন সবুজ বৃক্ষের মাঝে কাঠঠোকরা তাঁদের চঞ্চু দিয়ে
তীব্র আঘাতে খুঁড়ে খুঁড়ে খুঁজে হারানো সুখ
নির্বাচিত যন্ত্রণারা শুকনো পাতায় বাসা বাঁধে,
একাকী বিহঙ্গ মন খেলার ছলে পাতার বাসায় দেয় উঁকি।

প্রিয়তি

একটা
হৃদয়ে কতবার অস্ত্রাঘাত করলে
ভালোবাসা হয় রক্তাক্ত...
রক্তের নদী ছোটে নিরবধি....
আসো শেষবার দেখে যাও,
একটা হৃদয় কতবার ক্ষত-বিক্ষত করা যাই।

মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৭

বন্ধুত্ব


যখন মন খারাপ তোর 

একলা আকাশ দেখিস,

ভালো লাগেনা একাএকা

তখন আমায় ডাকিস।

যখন তোর রঙিন স্বপ্ন

রং হারিয়ে হারিয়ে ধুসর

তখন আমায় একটু খুজিস

দেখবি রামধনুকের বাহার।

দুঃখ নামের আঁধার কালো

যদি নামে তোর ঘরে,

আমি সব উড়িয়ে দেব

কালবৈশাখ নামক ঝড়ে।

বন্ধু আছি আমরা দুজন

থাকব চিরকাল

ক্ষণিকের এই ছোট্ট জীবনে

এ বন্ধন রবে যে অটল।

মায়ানমার ও রোহিঙ্গা

চোখ খুলিয়া দেখরে চেয়ে

কোথায় আজ মানবাধিকার,

মায়ানমারের সেনাবাহিনী 

হিংস্র কোন জানোয়ার৷

নারী পুরুষ নির্বিশেষ 

মারছে তারা ঝাঁকে ঝাঁকে

বিশ্ব শান্তি করছে নষ্ট

ওটাই হলো মূল কষ্ট।

বৌদ্ধ ধর্মে আছে নাকি

জীব হত্যা মহা পাপ,

তবে কেন ধর্ম গুরুরা সবে

আছে আজ চুপচাপ। 

যে যার দেশে করবে বাস

এটাই নাগরিক অধিকার,

তবে কেন সুকির দেশে

এমন নিষ্ঠুর অত্যাচার৷

শান্তির জন্য নোবেল পেয়েছে

শুনতে লাগে হাঁসি,

ঘৃণা লজ্জায় সুচির গলায়,

পরাও নোবেল শান্তির ফাঁসি।

নাফ হয়ে সাগরে মিশেছে

রোহিঙ্গাদের তাজা রক্ত,

তবুও বিশ্ব মোড়লেরা

বলছেনা এবার থামতো।

বিশ্ববাসী বোবা আজ

দেখছে নিষ্ঠুর খেলা,

এই খেলাটা সার্প ছোবলে

বাড়াবে বুকে জ্বালা।

মানবতা

যেখানে মানবতা নেই, 

সেখানে অধিকার নিশ্চুপ;

সকল অধিকার হরণ হচ্ছে,

তবুও সারা বিশ্ব চুপ।

কি হবে সকাল-সাঁঝে

শান্তির বাণী শুনিয়ে,

যেখানে মৃত্যু আসে সদা

ঢাক ঢোল পিটিয়ে।

শিশু যুবক বৃদ্ধ মরছে

সুচির অস্ত্র বানে,

দেখেও না দেখার ভান করে

সারা বিশ্ব তুলা দিয়েছে কানে।

দেশটা আজ পরাধীন লাগে

বার্মার সেনারা  অচেনা,

তাইতো আজ শান্তির বাণী

পথ খুঁজে পাইনা।

নিজ দেশেই বিতাড়িত ওরা

থাকার জায়গা নাই,

তাইতো ওদের বীভৎস  লাশ

যেখানে সেখানে পড়ে রই।

বিশ্ব বিবেক চুপ করে আজ

প্রতিবাদ প্রতিরোধ হীন,

এভাবে চলতে থাকলে

কেমনে শোধাবে ঋণ। 

(মিয়ানমার এ রোহিঙ্গাদের উপর আক্রমনের তিব্র নিন্দা জানাচ্ছি)

মানুষ গুলো

একদা মানুষের বিবেক ছিলো

বিবেকের দংশন ও ছিলো

বিবেক বুদ্ধি মানবিক বোধ ছিলো

মানুষগুলো মানুষ ছিলো।

প্রতিবাদে প্রতিরোধ ছিলো

ছিলো অন্যয়ের বিরুদ্ধাচরণ

বিদ্রোহ আর  বিপ্লব ছিলো 

যেখানে নিপীড়ন প্রতিহত হতো।

আজ সেই তর্জনী নেই

নেই সুউচ্চ সাহসী শির

নেই বিবেকের সেই দহন

বিবেচনাবোধ বিলুপ্ত আজ।

মানবিকতা বিলুপ্ত  আজ

বেহায়ায় ছেয়ে গেছে লোকালয়

মনুষ্যত্ব যাদুঘরে নিয়েছে ঠাঁই।

মানুষ আর মানুষ নাই!!!!


গ্রাম ভালোবাসি

ছোট্ট গাঁয়ের বনের ধারে

একটা ছোট্ট নদী,

পালতুলে কোথায় যাও

ওরে ও ভাই মাঝি।

গাছের ছায়ায় খেলা করে

দস্যি ছেলের দল,

কলসী কাঁখে বধূরা যাই

আনতে নদীর জল।

দিগন্তের ওই সবুজ মাঠে

রাখাল চড়াই গরু,

দিনের শেষে ক্লান্তি বেশে

সন্ধ্যা হলো শুরু।

পুকুরপাড়ে বাঁশবাগানে,

ওঠে যখন চাঁদ।

সোনালী আলো বলে হেসে,

এখন অনেক রাত।

আকাশেতে তারারা জ্বলে,

চাঁদে দেয় হাঁসি।

পূর্ব আকাশ প্রভাতের সূর্য,

বলে ভালোবাসি।







সোমবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৭

আরাকান

আরাকান
তোমার চোখের জলের
সময় হবে শেষ।
সঞ্চিত আছে যত দুঃখ-বেদনা,
বিরহ আর গঞ্জনা,
পুঞ্জিত সব আরাকান নারীর
অহরহ শত লাঞ্ছনা,
জ্বালাও মনের লেলিহান শিখা
পুড়ে হোক সব শেষ।
প্রতিবাদ প্রতিরোধে গর্জে ওঠার সময় হয়েছে বেশ।

আরাকান! 
তোমার চোখের জলের
সময় হয়েছে শেষ।
শাসকের নিষ্ঠুর চোখে,
লালসার নষ্ঠ ঝলকে,
লক লকে কুকুরের জিভে জল!
আরাকান  বধূ, শুধু যেন তাদের
ক্ষুধা মেটানোর ফল!
মোছো বোন অশ্রুবারি,
ঝাড়া দিয়ে ধরো
ভীষণ রুদ্র-বেশ।
বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দাও তুমিও কম কি সে!

আরাকান! 
তোমার চোখের জলের
সময় হয়েছে শেষ।
পাশবিক সেনাদের অচেনা কৃষ্টি,
বৌদ্ধদের সর্বগ্রাসী নিষ্ঠুর অনাসৃষ্টি।
মাগো, কোন ভুলে
জঠরেতে দিলে ঠাঁই 
এদেরও ভালোবেসে?
দয়ামায়া হারা, বেহায়া নরাধম তারা,
মানবতার লেশ নাই!
মুছে আঁখিজল,
জ্বেলে ক্রোধানল,
এই পাপ করো শেষ।
তোমার ত্যাজেই মিটে যাক সকল নিষ্ঠুরতার বেশ।

আরাকান! 
তোমার চোখের জলের
সময় হয়েছে শেষ।
কেউ নেই পাশে,
পুরা নিশ্চুপ ত্রাসে,
গুলিকরে আগুনজ্বেলে,
গ্রামের পর গ্রাম করেছে শেষ।
তবে চুপ কেনো,
করো সবে মিলে,
একসাথে জ্বলে,
এ বালাই নির্মূল নিঃশেষ।
জ্বলো ওঠো হে আরাকান!
কঠিন হৃদয়ে জাগো ; ঝেড়ে ফেলো  সকল আবেশ।

আরাকান! 
তোমার চোখের জলের
সময় হয়েছে শেষ।
নিষ্ঠুরতা সহে না কবির,
দেখতে চাইনা,
আর এই নরকের পরিবেশ।
জ্বালাও মনের লেলিহান শিখা
পুড়ে হোক সব শেষ।

আরাকান! 
তোমার চোখের জলের
সময় হয়েছে শেষ।


আরাকান

আরাকান
তোমার চোখের জলের
সময় হবে শেষ।
সঞ্চিত আছে যত দুঃখ-বেদনা,
বিরহ আর গঞ্জনা,
পুঞ্জিত সব আরাকান নারীর
অহরহ শত লাঞ্ছনা,
জ্বালাও মনের লেলিহান শিখা
পুড়ে হোক সব শেষ।
প্রতিবাদ প্রতিরোধে গর্জে ওঠার সময় হয়েছে বেশ।

আরাকান! 
তোমার চোখের জলের
সময় হয়েছে শেষ।
শাসকের নিষ্ঠুর চোখে,
লালসার নষ্ঠ ঝলকে,
লক লকে কুকুরের জিভে জল!
আরাকান  বধূ, শুধু যেন তাদের
ক্ষুধা মেটানোর ফল!
মোছো বোন অশ্রুবারি,
ঝাড়া দিয়ে ধরো
ভীষণ রুদ্র-বেশ।
বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দাও তুমিও কম কি সে!

আরাকান! 
তোমার চোখের জলের
সময় হয়েছে শেষ।
পাশবিক সেনাদের অচেনা কৃষ্টি,
বৌদ্ধদের সর্বগ্রাসী নিষ্ঠুর অনাসৃষ্টি।
মাগো, কোন ভুলে
জঠরেতে দিলে ঠাঁই 
এদেরও ভালোবেসে?
দয়ামায়া হারা, বেহায়া নরাধম তারা,
মানবতার লেশ নাই!
মুছে আঁখিজল,
জ্বেলে ক্রোধানল,
এই পাপ করো শেষ।
তোমার ত্যাজেই মিটে যাক সকল নিষ্ঠুরতার বেশ।

আরাকান! 
তোমার চোখের জলের
সময় হয়েছে শেষ।
কেউ নেই পাশে,
পুরা নিশ্চুপ ত্রাসে,
গুলিকরে আগুনজ্বেলে,
গ্রামের পর গ্রাম করেছে শেষ।
তবে চুপ কেনো,
করো সবে মিলে,
একসাথে জ্বলে,
এ বালাই নির্মূল নিঃশেষ।
জ্বলো ওঠো হে আরাকান!
কঠিন হৃদয়ে জাগো ; ঝেড়ে ফেলো  সকল আবেশ।

আরাকান! 
তোমার চোখের জলের
সময় হয়েছে শেষ।
নিষ্ঠুরতা সহে না কবির,
দেখতে চাইনা,
আর এই নরকের পরিবেশ।
জ্বালাও মনের লেলিহান শিখা
পুড়ে হোক সব শেষ।

আরাকান! 
তোমার চোখের জলের
সময় হয়েছে শেষ।



আহ্বান

বানের মত আসছে ছুটে 

নির্যাতিত রোহিঙ্গারা,

ভিটে মাটি সব হারিয়ে

ওরা আজ দেশ ছাড়া।

গুলি করে কুপিয়ে মারে

বৌদ্ধ আর সৈন্যরা,

আত্মীয় স্বজন সব হারিয়ে

ওরা আজ দিশেহারা। 

দারুণ কষ্টে রোহিঙ্গাররা

দিন করছে পার,

বাধ্য হয়ে বাংলাদেশের

রাস্তায় পাতছে ঘর।

আসুন ওদের পাশে দাঁড়াই

সামর্থ্য যার যতটুকু,

খাদ্য এবং পানি নিয়ে সবে

ছুটি ওদের পিছু।

প্রতিক্ষা

অসহ্য ব্যথা সয়ে

আমি কাঁদি নিরবে কেউ তা বুঝেনা,

তোমার থেকে দূরে

তবু মন আমার অন্য কাউকে খুঁজেনা ।

মন আমার কাঁদে

তোমারও লাগি দিবানিশী অলখে,

তুমি আমার প্রাণে

ভুলতে পারিনা চোখের এক পলকে ।

ভাল লাগে তাই

ভালবেসে যাই একি আমার অপরাধ,

যত ভাবি তত

ভালবাসি মিটে নাতো আমার সাধ ।

যদি পার তুমি

ভালবেসো আমারে করে দিওনা পর,

তোমার পথ চেয়ে

থাকব আমি যে সারাটা জীবন ভর ।






শীত

জীব প্রেম করেন যিনি,
স্রষ্টাকে পেয়েছেন তিনি।

প্রচন্ড শীত,
গ্রামে আছেন যারা,
অনুভব করছেন তাঁরা।
পোশাক নেই যাদের,
কষ্ট হচ্ছে তাঁদের।
ধনী আছেন যারা,
এগিয়ে আসুন তাঁরা।
সামর্থ আছে যাদের,
বুজতে হবে তাঁদের।
আসুন সবাই এগিয়ে,
শীত যাক পালিয়ে।
করুন সবাই সহানুভুতি,
আছে যাদের অনেকপাতি।
একটি পোশাক কর দান,
দেখবে আনন্দ কত খান।
নিজের বৌয়ের জন্য,
কিনেন কাশমেরী চাঁদর,
তবুও পাবেননা আদর।
ওর আহলাদ,
অনেক বেশি।
চাঁদ দিলেও হয়না খুঁশি।
কিন্তু যারা,
গরীব মানুষ,
অল্পতে তাঁদের দিল খুশ।
বাড়িয়ে দিলে দুহাত,
মানবতার দৃষ্টি পাত।
স্রষ্টা তাঁতে অনেক খুঁশি,
যাতে তাঁর মানব হাঁসি।

ভালোবাসা

ভালোবাসা কি গাঙ্গের পানি
নাকি গাছের ফল?
যে চাইলেই পাওয়া যায়... এটা পাইতে গিয়ে কত জুঁটি,
মরে অমর হয়েছে,
কত ইতিহাস রচিত হয়েছে,
আর তুমি চাইলেই পেয়ে যাবে।
যেনে রাখ এটা মাকাল ফল,
অনেকে বলে দিল্লিকা লাড্ডু।
খাইলেও পস্তাইবা আর না খাইলেও!
এটা পাইতে বিস্বাস থাকা লাগে,
মনের গভীরে।
সন্মান দেওয়া লাগে,
মর্যাদা দেওয়া চাই,
একে অপরের প্রতি।
একতরফা কোন কিছু হয়না।
যদি তাই হতো তাহলে.......
একহাতে তালি বাঁজত।
এটাকে বলা হয় স্বর্গীয়,
পবিত্র---
স্বর্গ থেকে আসে আবার,
স্বর্গে ফিরে যাই।
ভলোবাসা নামে অদৃশ্য বস্তু,
পৃথিবীতে টিকে রয়।

প্রেম হয় তখন

দর্শন বিনে মজে নাহি কভু,
প্রেমিক প্রেমিকার মন।
বর্ষন বিনে ভিজে নাহি কভু,
শিশিরে কোন বন।
কাননে দেখিলে কুসুম,
দেখবে সেথাই অলি।
মধুকর চষিয়া বেড়াছে,
আঁশ পাশের সকল গলি।
নদীতে যদি দেখ-
উপসে পড়িছে সদা জল,
বুঝিয়ো সেথায়,
যৌবন করিছে টলমল।
আকাশেতে যদি দেখ,
সাদা মেঘের ভেলা।
ভাবিবে সেথায়-
প্রেম নেই শুধু অবহেলা।
নয়ন বোঝে নয়নের কথা,
মন বোঝে মন।
নয়নের সাথে যদি কভু,
হয় দুটি মনের মিলন,
আসুক সকল বাঁধা,
প্রেম হতে কতক্ষন।

পতিতা

জীবিকা যাদের বিভীষিকাভরা,
জীবন মরুময়!
সমাজের বুকে অভিশাপ
তারা– তারা তো ব্যাধি,
তারা তো কলঙ্কীনি;
দেহকে যারা টাকার বিনিময়ে বিকিয়ে দিয়ে, ছলনার প্রেমে ভূলে থাকে কিছুক্ষণ,
দিনের আলোয় বদ্ধ তাদের সাজানো জলসার ভূবন!
রবি কিরণ নিভিয়ে সহসা হয়েছে জাত নিশাচর,
কাল নাগিনীর ফনার
তুলে নৃ্ত্য করে সহচর!
পেটের জ্বালায় সাজায় তারা বিধ্বস্ত তনুখানি,
সারাটি জীবন
মরীচিকাময় তাদের, জোটে যত পরিহাস আর গ্লানি!
প্রতিঘন্টায় বদলাতে হয় তাদের প্রেমের অভিশপ্ত অভিনয়,
নতুন যাতনায় জেগে ওঠে তারা এটাই বাস্তবময়।
আলোকের পরে নেমে
আসে তাহাদের আঁধারের
যবনিকা!
তবু তাদের ক্লান্তি নেই; অবসর নেই;এটাই সহচিকা।
তারা অানন্দময়ী,নকল প্রেমের
দ্রুতী, হোক কলঙ্কময়ী,
মানুষ তবু তারা, তার চেয়ে
বড় – তারা নারী, কারোর জননী!

রবিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৭

বাংলাকে ভালোবাসি

মৃত্যুর পর কেহ সুধায়- কোথা যেতে চাস তুই ওরে?
বলবো আমি বাংলায় যাব আর কোথাও নারে।

যারি ফুল ফলে বড় হয়েছি পড়েছি যার প্রেমে,

তাঁরি সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করি আজ কেমনে।

মুসলিম হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান সকলি মোর ভাই,

এক হাড়িতে রাধি মোরা এক থালাতে খাই।

সম্প্রতির মিলন বাঁধনে এক সাথে থাকি মোরা,

হাতে হাত ধরে পথ চলি ভাঙে না মোদের জোঁড়া। চর্যাপদের কঠিন বাক্যে আমার ইতিহাস রয়, হাজারো দ্বন্দ্বেও এক থেকেছি হয়নি মোদের ক্ষয়।

আউল বাউল লালনের দেশে সুফি কীর্ত্তন হয়, মিলে মিশে মোরা উৎসব করি নাহি কোন ভয়। জঙ্গীবাদ সন্ত্রাসীদের করেছি আমরা দমন, তবুও মোরা এক থেকেছি ভুলে সব নিপিড়ন। 

রাজা জমিদার অনেক দেখেছি পেছনে অনেক ইতিহাস,

ওগুলো আজ বলি তবে হবেনা শেষ কবিতার পাঠ। আমি বাঙালী আমার পরিচয় আমি বাংলায় কথা বলি,

ভাষার জন্য জীবন দিয়েছি করিনায় কার্প্যনতা,

কখনো আমি মানিনাই কভু কারো পরাধীনতা।  রক্ত দিয়ে কিনেছি আমি প্রিয় স্বদেশ ভুমি,

চরন তলে সবুজ লতা এটাই দিয়েছো প্রভু তুমি।

শুধু তোমার জন্য

আমি লেখক নয়
তবুও লিখতে চাই আমাদের প্রেমের কথা.
আমি কবি নয়
তবুও লিখতে চাই তোমাকে নিয়ে.
আমি গায়ক নয়
তবুও গাইতে চাই তোমাকে নিয়ে.
আমি নৃত্ত্যশিল্পী নয়
তবুও নাচবো তোমাকে নিয়ে বৃষ্টির মাঝে.
আমি চিত্রশিল্পী নয়
তবুও তোমাকে আঁকবো রংধনুর রংয়ে.
আমি অতটা ভালো নয়
তবুও ভালো হতে চাই তোমার জন্য।।।

বৃদ্ধাশ্রয়ে মায়ের আত্মকথা

অনেক বেশি জায়গা জুড়ে নতুন এই বাড়ি
বিদেশি সব প্রসাধনী আর দামি আসবাব গাড়ি।

ঘরে বাইরে চারিদিক  রঙ বে-রঙের বাতি,

ছোট্ট একটা শুন্য ঘরে কাটে আমার রাতি।

আমার ছেলে আমার মেয়ের নেই যে কোন শরম,

তাইতো আমার স্থায়ী ঠিকানা এই বৃদ্ধাশ্রম ।

শিশুকালে ছেলে মেয়ে ধরতো শত বায়না,

এটা দাও ওটা দাও দেরি যে আর সহেনা।

চাহিবামাত্র সব কিছুই পরিমান মত পাই,

ওরা এখন সব পেয়েছে আমাকে পাই নাই।

ওদের জন্য সব করেছি দিয়েছি স্বেচ্ছাশ্রম, 

তাইতো আমার শেষ ঠিকানা এই বৃদ্ধাশ্রম ।

কত অভিযোগ কত অনুরাগ আর কত অজুহাত,

সকাল বিকাল খাওয়াতাম ওদের দুধ মাখা ভাত।

বলতাম হেসে কাছে ডাকে মানিক আর ময়না,

এই বুকে সদা থাকিস আমি আর কিছু চাইনা।

ওরা এখন কোর্মা পোলাও খায় প্রতিদিন,

ভুলে গেছে মায়ের হাতের মজার খাবারের দিন !

তাই বুঝি আজ ওদের কাছে আমার জায়গা কম,

তাইতো আমার ঠিকানা হলো বৃদ্ধাশ্রম ।

আমার সন্তানরা আমার মত হয়না যেন সুখি,

আঁধার কালো হয়না ওদের বিলাসী জীবনমুখী;

প্রভু ওদের সুখি রেখো করোনা ওদের সন্তানের মতিভ্রম,

ভুলে গেছি আজ আমি আমার অতীত পরিশ্রম,

নোনা জলে কাঁটছে দিন হচ্ছি না কভু বিভ্রম,

তাইতো আমার ঠিকানা হলো স্থায়ী এই বৃদ্ধাশ্রম ।

রচয়িতাঃ

শাহাবুদ্দীন

সদর যশোর।

১৭/০৮/১৭ খ্রিঃ

বাবা

যেদিন তুমি চলে গেছ,

সেদিন থেকে আমি একা।

মাথার উপর ছাঁদটা খসে,

হয়ে গেছে-আঁকাশটা ফাঁকা।

আজো আমি মধ্য রাতে,

একা ঘরে কাঁদি।

বদ্ধ ঘরে উদাস নয়নে,

একা চেয়ে থাকি।

রোজ সকলাকে ঘুম ভাঙ্গিয়ে,

বলতে তুমি খোকা।

মানবসেবা করবিরে তুই,

দিবিনা কাউকে ধোঁকা।

আজো আমি অনুভবে তোমার স্পর্শ পাই,

প্রতি সকলে নয়ন খুলে তোমায় দেখতে চাই।

যখন আমি নয়ন মেলে দেখি তুমি নাই,

তখন আমার হৃদয়টা করে হায় হায়।

বিশ্বাস

আমার আকাশ অনেক বড়
চাইলে তুমি পাখি হয়ে

ডানা মেলে উড়তে পারো।
আমার স্বপ্ন অনেক বেশি

চাইলে তুমি দেখতে পারো

সকাল সন্ধ্যা দিবা নিশি।

আমার আছে সুখের নদী

স্বচ্ছ শীতল জলের ঢেউ

ইচ্ছা হলে সাঁতার কাটো

বাঁধা দিবেনা কেউ।

আমার সবুজ ভালোবাসা

সকল অবুঝ অভিমান

চাইলে তুমি নিতে পারো

আছে সাগর পরিমান!

আমার বুক ভরা শ্বাস

আর গভীর উচ্ছ্বাস

আসবে তুমি এই জীবনে

এটাই আমার বিশ্বাস।

রচয়িতাঃ শাহাবুদ্দীন

সদর যশোর।

২৮/০৮/১৭ ইং

http://shikshabarta.com/2017/08/28/কবিতা-105/

ঘৃণা

না!!!
আর পারছি না,

কোন রঙিন প্রেমের ছন্দ বা,

রক্ত গরম করা, 

সামাজিকতা নিয়ে লিখতে।

মরে গেছে সব পচে গেছে,

পোকা ধরেছে সমাজের রন্ধে রন্ধে।

গন্ধ বেরোচ্ছে বিশ্রী পচা গন্ধ,

এই নষ্ট সমাজ যেন পচা লাশের প্রতিবিম্ব। 

চারিদিকে আজ অসভ্য ইতরেরা,

কিলবিল করছে,

ময়লার উপরে থাকা পোকার মত।

ওরাই নাকি সমাজপতি !

আরে ওরাইতো শয়তানের এক খন্ড।

বিদ্যা নেই বিবেক নেই,

আছে শুধু দ্বন্দ্ব,

ধ্বংস হোক এই সকল শয়তান,

তাদের মুখ হোক চিরো তরে বন্ধ।

রচয়িতাঃ

শাহাবুদ্দীন

সদর যশোর।

যোগাযোগঃ tonygobila6@gmail.com

বর্ষা

দিনভর দাঁড়িয়ে বারান্দাতে একাএকা,
তবু পায়নি এক পলক সূর্যের দেখা।

উড়িতেছে গগন জুড়িয়া কালো শাড়ির আঁচল,

অবিরত ধাঁরায় ঝড়ছে সারাদিন  বৃষ্টির জল। 

টুপটুপ  রিমঝিম ঝরছে সারা দিন, 

বৃষ্টির মাদল বাজাই অলসতার বীণ। 

কেউ ভেজে রাস্তায় কেউ ফাঁকা মাঠে, 

কেউ আবার উঠানেতে ভেজে আপন তটে 

ব্যাঙ ডাকে ডিবির উপর বসে সারে সারে,

মেঘের গর্জনে বুকটা কাঁপছে বারে বারে। 

রাখাল ভেজে মাঠে সাথে নিয়ে গরু, 

কদমের শুভ্রতা হেঁসে বলে এইতো বর্ষা শুরু। 

বর্ষার টুপটাপে চুপচাপ পাড়া,

মাঝে মাঝে পালাগানে দিয়ে যাই সাঁড়া।

পথিক চলার পথে হয় চিৎপাত,

তাই দেখে হেঁসে ওঠে ছোঁট বাবুসাব। 

ফুটফুটে ফুলেতে নেই ভ্রমর-প্রজাপতি, 

বর্ষার এই জলে তাঁরা হারিয়ে স্বাভাবিক উড়ার গতি।

রচয়িতাঃ শাহাবুদ্দীন

২২ জুলাই, ২০১৭

চোখের জল

চোখের জল


অর্থ দিয়ে কিনতে পারো তৃষ্ণার জল,
কিন্তু কিনতে কি পারো চোখের জল?
পৃথিবীর কোথায় এমন মানুষ আছে,
চোখের জল কেনা যায় যার কাছে।

ক্যানভাসে আঁকা ঐ ছবিটা
হাজার কথার সৃষ্ট প্রলাপ,
এক ফোঁটা চোখের মুক্ত জল, সে তো
ব্যথিত আত্মার সুদীর্ঘ বিলাপ।

চোখের জল নিরবতা ভেঙে
কত কথা বলে-
গাঢ় সে অনুভূতি ব্যক্ত হ’লে
ঝরে সেতো দুনয়ন বেয়ে।

চোখের জলের রং কী?
বুঝতে পারে কেহ,
কেন ঝরে নিরবে কি তার মোহ?
কত কষ্ট পেলে পরে অশ্রু ঝরে,
সে অশ্রু নিরবে কত কথা বলে।

যারা কভু অপচয় করেনি চোখের জল,
যাদের চোখের জলের সরোবরে ফোটেনি শতদল,
তেমন মানুষ ক’জন আছে?
যারা কভু মাথা নত করেনি বিমুগ্ধ বেদনার কাছে।

ফেরিওয়ালা

আমি এক ফেরিওলা

ফেরি করি সারা বেলা।

সকাল দুপুর সন্ধ্যা রাতে

ফেরি করি পথে ঘাটে।
ঘরে ফিরেও মনটা আমার

ফেরি করে পরিবার।

সারাদিনে যাই কামই

সংসারে লাগে পুরোটায়।
অভাব অভিযোগ আছে যত

পুরন হয়না মনের মত।

তবুওতো আছি সুখে

জীবনটা তো যাচ্ছে কেঁটে।
সৎ ভাবে জীবনযাপন

চলছে সবি মনের মতন।

যদিও আমি ফেরিওলা 

এই পরিচয়ে পথচলা। 
২৯ জুলাই, ২০১৭

রবিবার, ১ অক্টোবর, ২০১৭

রোহিঙ্গা শিশুদের নিয়ে রচিত কবিতা

অনাথ শিশু

-শাহাবুদ্দীন



পথের ধারে লম্বা লাইন সারে সারে শিশু,
বাপ-মা হারা অনাথ ওরা ছুটছে সবার পিছু।
কি অপরাধ করছে তারা এই ধরনীর পরে,
পেটের ক্ষুদায় ছুটছে ওরা এপার থেকে ওপারে ।
আরো কিছু শিশু আছে উপায়ন্তর না পেয়ে,
ছুটছে তারা ক্লান্তিহীন ত্রাণের ট্রাকের পিছু গিয়ে।
যেথায় যখন পাচ্ছে যাহা খাচ্ছে তুলে নিয়ে,
এসব দেখেও লজ্জা পাই না সুচি নামক মেয়ে।
ক্ষুধার জ্বালায় ক্লান্ত দেহ ধুলায় লুটায় পড়ে,
এসব অনাথ শিশুর জন্য বাংলাদেশ কাঁদে।
খাদ্য দিচ্ছে বস্ত্র দিচ্ছে – দিচ্ছে বাসস্থান,
বিশ্বের বুকে বাড়ছে নিত্য বাংলাদেশের মান।
দিনের শেষে আঁধার নেমে যখন প্রভাত হবে,
ছুটবে আবার খাবারের জন্য ব্যস্ত রাস্তায় গিয়ে।
এভাবে চলতে আছে ওদের জীবনের প্রতিক্ষণ,
আসুন আমরা সহায়তা করি পারি যতক্ষণ।
অনাথ শিশুকে মনে করুন নিজেরই সন্তান,
আসুন আমরা করি তাদের খাদ্য বস্ত্র দান।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা


মন হতে প্রেম যেতেছে শুকায়ে
          জীবন হতেছে শেষ,
শিথিল কপোল মলিন নয়ন
          তুষার-ধবল কেশ!
পাশেতে আমার নীরবে পড়িয়া
          অযতনে বীণাখানি,
বাজাবার বল নাইকো এ হাতে
          জড়িমা জড়িত বাণী!
গীতিময়ী মোর সহচরী বীণা!
          হইল বিদায় নিতে;
আর কি পারিবি ঢালিবারে তুই
          অমৃত আমার চিতে?
তবু একবার আর-একবার
          ত্যজিবার আগে প্রাণ,
মরিতে মরিতে গাহিয়া লইব
          সাধের সে-সব গান!
দুলিবে আমার সমাধি-উপরে
          তরুগণ শাখা তুলি,
বনদেবতারা গাইবে তখন
          মরণের গানগুলি!